Logoশরয়ী সমাধান
Cover image

প্রবন্ধ

দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ আমল (৬ পর্ব একত্রে)

Hm Sulayman

১১ জুন, ২০২৫

Share Copy Link

দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ আমলঃ ( পর্ব-১)

রাতে অনেকেই দ্রুত ঘুমিয়ে যায় অনেকে দেরিতে ঘুমাই। যখনই ঘুমাতে যাই, ঘুমানোর পূর্বে কয়েকটি আমল করতে পারি।

  1. সুরা ইখলাস সুরা ফালাক্ব এবং সুরা নাস পাঠ করে শরীরে ফুঁক দেয়া। দুই হাত দিয়ে যতদুর সম্ভব শরীরে হাত বুলিয়ে দেয়া।

  2. আয়াতুল কুরসি পাঠ করা

  3. সুরা বাক্বারা এর শেষ দুই আয়াত পাঠ করা।

আম্মাজান হযরত আয়েশা (রা.) বলেন, "রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রতি রাতে যখন বিছানায় যেতেন, তখন দুই হাত একত্র করে তাতে সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পড়ে ফুঁ দিতেন। অতঃপর মাথা ও চেহারা থেকে শুরু করে যত দূর সম্ভব দেহে তিনবার দুই হাত বোলাতেন।" (বুখারি, হাদিস : ৫০১৭)

রাসুল (সা.) বলেন, "তুমি যখন শয্যা গ্রহণ করবে, তখন আয়াতুল কুরসি পড়বে। তাহলে আল্লাহর পক্ষ থেকে সর্বদা তোমার জন্য একজন রক্ষক থাকবে এবং সকাল পর্যন্ত শয়তান তোমার কাছে আসতে পারবে না।" (বুখারি, হাদিস : ২৩১১)

সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পড়া। কোনো ব্যক্তি ঘুমানোর আগে এ দুই আয়াত পড়লে তা তাদের গোটা রাতের নিরাপত্তার জন্য যথেষ্ট হবে। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, "যদি কোনো ব্যক্তি সুরা বাকারার শেষ দুটি আয়াত পাঠ করে, তবে এটিই তার জন্য যথেষ্ট।" (বুখারি, হাদিস : ৫০৪০)

আল্লাহ পাক তৌফিক দান করুন। আমিন।

দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ আমলঃ (পর্ব-২)

প্রতি চন্দ্র মাসে ধারাবাহিক ৩ টি রোজা রাখতে হয়। এর ফজিলত অনেক বেশি। হাদিসে উক্ত রোজাগুলিকে আইয়ামে বীজের রোজা বলে। আইয়ামে বীজ প্রতি চন্দ্র মাসের ১৩, ১৪ এবং ১৫ তারিখ। ধারাবাহিক এই ৩ দিন রোযা রাখা সুন্নত।

সুনানে নাসাঈ শরিফের মধ্যে হাদিস এসেছেঃ

عَنْ جَرِيرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: صِيَامُ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ صِيَامُ الدَّهْرِ، وَأَيَّامُ الْبِيضِ صَبِيحَةَ ثَلَاثَ عَشْرَةَ، وَأَرْبَعَ عَشْرَةَ، وَخَمْسَ عَشْرَةَ.

হযরত জারীর ইব্‌ন আব্দুল্লাহ রাযি. থেকে বর্ণিতঃ

"প্রত্যেক মাসের তিন দিন সওম (রোযা) পালন করা সারা জীবন সওম (রোযা) পালন করার সমতুল্য।"

আর আইয়্যামুল বীজ- তেরো, চৌদ্দ এবং পনের তারিখ।

সহিহ বুখারি শরিফের মধ্যে এসেছেঃ

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ قَالَ : قَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " أَلَمْ أُنَبَّأْ أَنَّكَ تَقُومُ اللَّيْلَ وَتَصُومُ ؟ " فَقُلْتُ : نَعَمْ. فَقَالَ : " فَإِنَّكَ إِذَا فَعَلْتَ ذَلِكَ هَجَمَتِ الْعَيْنُ، وَنَفِهَتِ النَّفْسُ، صُمْ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ، فَذَلِكَ صَوْمُ الدَّهْرِ، أَوْ كَصَوْمِ الدَّهْرِ ". قُلْتُ : إِنِّي أَجِدُ بِي - قَالَ مِسْعَرٌ : يَعْنِي قُوَّةً - قَالَ : " فَصُمْ صَوْمَ دَاوُدَ عَلَيْهِ السَّلَامُ، وَكَانَ يَصُومُ يَوْمًا وَيُفْطِرُ يَوْمًا، وَلَا يَفِرُّ إِذَا لَاقَى ".

" অর্থাৎ প্রতি মাসে ৩ টি করে রোজা রাখা সারা বছর রোজা রাখার সমতুল্য।"

আল্লাহ তৌফিক দান করুন। আমিন।

দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ আমলঃ (পর্ব-৩)

জান্নাতী কে হবে!!

এমন একটি দোআ এবং ইস্তেগফার আছে যদি কোন ব্যক্তি সেই ইসতেগফার বা দোআ দিনের বেলা মন থেকে বলে আর ঐ দিন সন্ধ্যার আগে মারা যায়, সে জান্নাতীদের শামিল হবে। তেমনি যে তা রাতের বেলায় মন থেকে বলে আর ভোর হওয়ার আগেই মারা যায় সে জান্নাতীদের শামিল হবে।

ইস্তেগফারটি নিন্মরুপঃ

اللّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لاَ إِلهَ إِلاَّ أَنْتَ، خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ، وَأَنَا عَلى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ، أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ، أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ، وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي، فَاغْفِرْ لِي، فَإِنَّهُ لاَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلاَّ أَنْتَ.

উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা আনতা রাব্বি লা ইলাহা ইল্লা আনতা খালাক্বতানি ওয়ানা আবদুকা, ওয়ানা আলা আহদিকা ওয়া ওয়া'দিকা মাসতাতা'তু, আউযুবিকা মিন শাররি মা সনা'তা আবুউ লাকা বিনি'মাতিকা আলাইয়্যা ওয়া আবুউ লাকা বিযানবিই, ফাগফিরলি, ফাইন্নাহু লা ইয়াগফিরুয যুনুউবা ইল্লা আনতা!

( সহীহ বুখারী : ৬৩০৬ )

আল্লাহ ইস্তেগফার মুখস্ত করে প্রতিদিন আমলের তৌফিক দান করুন। আমিন।

(বিঃদ্রঃ আরবি এই ইস্তেগফার উচ্চারণ কখনোই বাংলায় সম্ভব নয়। বাংলায় যেটা লিখেছি সেটা উচ্চারণ বিকৃতি। কেউ ব্যাকারণ নীতিমালা না জানলে শুদ্ধভাবে পাঠ করতে পারবে না। উক্ত ইস্তেগফার এর সঠিক উচ্চারণ শুনতে চাইলে নিকটস্থ কোনো হাফেজ বা আলেমের শরণাপন্ন হোন)

দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ আমলঃ (পর্ব-৪)

দুরুদ পাঠের ফজিলতঃ

আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আছ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন-

من صلى علي صلاة صلى الله عليه بها عشراً

"যে আমার উপর একবার দরূদ পড়বে, বিনিময়ে আল্লাহ তাআলা তার উপর দশটি রহমত নাযিল করবেন।"-সহীহ মুসলিম ১/১৬৬; জামে তিরমিযী ১/১০১

অন্য হাদীসে আছে, হযরত আনাস রা. বলেন, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

من صلى علي صلاة واحدة صلى الله عليه عشر صلوات، وحطت عنه عشر خطيئات، ورفعت له عشر درجات.

"যে আমার উপর একবার দরূদ পড়বে আল্লাহ তার উপর দশটি রহমত নাযিল করবেন, তার দশটি গুনাহ ক্ষমা করা হবে এবং দশটি দরজা বুলন্দ হবে।"-সুনানে নাসায়ী ১/১৪৫।

দৈনন্দিন গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনীয় আমলঃ (পর্ব-৪)

হযরত আবু উমামা রা. থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ

مَنْ قَرَأَ آيَةَ الْكُرْسِيِّ فِي دُبُرِ كُلِّ صَلَاةٍ مَكْتُوبَةٍ لَمْ يَمْنَعْهُ مِنْ دُخُولِ الْجَنّةِ إِلّا أَنْ يَمُوتَ.

"প্রতি ফরয নামাযের পর যে ব্যক্তি আয়াতুল কুরসী পড়বে তার জান্নাতে যাওয়ার পথে মৃত্যু ছাড়া আর কোনো বাধা থাকবে না।"

(আমালুল ইয়াওমি ওয়াল লাইলাহ, নাসায়ী, হাদীস ১০০)

ফজরের নামাযের পর সূযোর্দয় পর্যন্ত মসজিদে বসে যিকির করতে থাকা, এরপর দুই রাকাত নামায পড়া।

আবু উমামা রা. থেকে বর্ণিত, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ

مَنْ صَلّى صَلَاةَ الْغَدَاةِ فِي جَمَاعَةٍ، ثُمَّ جَلَسَ يَذْكُرُ اللهَ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ، ثُمَّ قَامَ فَرَكَعَ رَكْعَتَيْنِ، انْقَلَبَ بِأَجْرِ حَجّةٍ وَعُمْرَةٍ.

قال المنذري في الترغيب (৬৭২) والهيثمي في المجمع (১৬৮৯৭): إسناده جيد.

"যে ব্যক্তি জামাতের সঙ্গে ফজরের নামায আদায় করল, তারপর সূর্যোদয় পর্যন্ত মসজিদে বসে আল্লাহর জিকির করল, এরপর দুই রাকাত নামায আদায় করল, সে ব্যক্তি হজ্ব ও ওমরার সওয়াব নিয়ে ফিরল।"

(মুজামে কাবীর, তবারানী, হাদীস ৭৭৪১)

দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ আমলঃ (পর্ব-৬)

রাতে ঘুমানোর পূর্বে অজু করে ঘুমানো এবং ডান কাত হয়ে ঘুমানো।

সহিহ বুখারি শরীফে এব্যাপারে নির্দেশনা বর্ণিত হয়েছেঃ

عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ قَالَ : قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " إِذَا أَتَيْتَ مَضْجَعَكَ فَتَوَضَّأْ وُضُوءَكَ لِلصَّلَاةِ، ثُمَّ اضْطَجِعْ عَلَى شِقِّكَ الْأَيْمَنِ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ "যখন তুমি বিছানায় যাবে তখন সালাতের উযূর মতো উযূ করে নেবে। তারপর ডান কাত হয়ে ঘুমাবে।" ( বুখারি :২৪৭ )

মুজাহিদ রাহিমাহুল্লাহ বলেনঃ "ইবনে আব্বাস রাযিআল্লাহু আনহু আমাকে বলেছেন; তুমি অবশ্যই অজু অবস্থায় শয়ন করবে। কারণ মানুষ যে অবস্থায় মারা যাবে; সে অবস্থায় তাকে উঠানো হবে কেয়ামতে" ( মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক : ১৯৮৮৪ )

Share Copy Link

মন্তব্য

সকল প্রসঙ্গ

২৭তম রজনী
অনলাইন কোর্স
অলিম্পিক
আংটি
আধুনিক মাসআলা
আধুনিক মাসাআলা
আমল
উম্মুল মু'মিনিন
ঋণ
ওকালতি
কট
কাপড়ের মোজা
কাফফারা
কাযা
কুড়িয়ে পাওয়া জিনিস
কুফর
কুরবানী
ক্রিকেট
ক্রিপ্টোকারেন্সি
ক্র্যাকড
খেলাধুলা
খেলাধুলা হতে উপার্জন
গোশত বন্টনে
জমি
জর্দা
ডাক্তারি বিদ্যা
ডিফেন্স ফোর্স
ড্রপ শিপিং
তাকবীরে তাহরিমা
তামাক
তারাবীহ
তালাক
দাবা
দৈনন্দিন আমল
দোআ
দোয়া
নবীজি
নবুয়তের সিলমোহর
নামাজ
নেশা
নৌবাহিনী
পাইরেটেড
পার্লামেন্ট সদস্য
পাশা
পুলিশ
পেইড কোর্স
প্রয়োজনীয়
ফরেক্স ট্রেডিং
ফিদিয়া
ফুটবল
বন্ধক
বর্গা
বাইনারি ট্রেডিং
বিচারপতি
বিটকয়েন
বিড়ি
বিডিআর
ব্যবসায়
ব্যাডমিন্টন
ব্যারিস্টার
মদ
মাকরুহ
মাসবুক
মাসেহ
মুনাজাত
মেডিকেল
মোজা
যাকাত
যাকাত-ফিতরা
রাজনীতি
রাস্তায় পাওয়া জিনিস
রুকু
রোজা
রোজা ভঙ্গের কারণ
রোজার মাসআলা
রোজার মাসাআলা
রোযা ভঙ্গের কারণ
র‍্যাব
লাইলাতুল ক্বদর
লাইলাতুল বারাআত
লুডু
শতরঞ্জ
শবে ক্বদর
শবে বরাত
শিক্ষক
সফটওয়্যার
সংবিধান
সরকারি চাকরি
সহশিক্ষা
সাধারণ সরকারি চাকরি
সামরিক বাহিনী
সামাজিক প্রথা
সালাম
সিগারেট
সিজদা
সুদ
সেক্যুলারিজম
সেনাবাহিনী
স্ত্রী
হারাম

© ২০২৫ শরয়ী সমাধান - সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

Facebook Group