Logoশরয়ী সমাধান
Cover image

প্রবন্ধ

বিটকয়েনের শরয়ী পর্যালোচনাঃ প্রথম পর্ব

Hm Sulayman

১৬ এপ্রিল, ২০২৫

Share Copy Link

ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং বিটকয়েনের পরিচয়, বাস্তবতা

বর্তমান সময়ে অনলাইনে সবচাইতে জনপ্রিয় বহুল আলোচিত একটি লেনদেনের নাম হচ্ছে ক্রিপ্টোকারেন্সি। ক্রিপ্টোকারেন্সির অনেকগুলো লেনদেন পদ্ধতি আছে। ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম এটা। যেমন বিটকয়েন, ইথেরিয়াম, লাইট কয়েন, রিপল, বিনান্স কয়েন সহ ক্রিপ্টোকারেন্সির আরো একাধিক প্রকার আছে। ক্রিপ্টোকারেন্সির লেনদেনের মধ্যে বিটকয়েন সবচাইতে বহুল প্রচলিত এবং লাভজনক(!)

কিন্তু প্রতিটি লেনদেন বুঝতে হলে, শরীয়ত সম্মত হতে হলে সর্বপ্রথম সেটার পরিচিতি, প্রকারভেদ এবং পদ্ধতি জানা আবাশ্যক। আমরা আজকের এই পর্বে মৌলিকভাবে ক্রিপ্টোকারেন্সি কাকে বলে, তার প্রকৃতি কি, এর প্রতিষ্ঠাতা কে এবং এর প্রকারভেদ, লেনদেন সিস্টেম নিয়ে আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ।

ক্রিপ্টোকারেন্সির পরিচয়

ক্রিপ্টোকারেন্সি হল একটি নতুন লেনদেনের উপায়। বলা যেতে পারে ক্রিপ্টোকারেন্সি হল একপ্রকার Digital Currency Of Cash। Crypto শব্দ টির অর্থ হল Secret বা গোপন এবং Currency শব্দের মানে হল অর্থ যার বিনিময়ে বিভিন্ন পণ্যের আগান প্রদান করা হয়। ক্রিপ্টোকারেন্সি এর অর্থ হলো গোপনঅর্থ। ক্রিপ্টোকারেন্সি হল একটি Encrypted Currency যেখানে লেনদেন সম্পূর্ণ গোপন থাকে এবং এর উপরে কোনো তৃতীয় ব্যক্তির হাত থাকে না। এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সরকারের হাতে নিয়ন্ত্রণ থাকছে না। এটিই এই লেনদেনের বৈশিষ্ট।

১৯৮৩ সালে এই ক্রিপটোকারেন্সি বা গুপ্ত মুদ্রা সূচনা হয়েছিল। এখন সবচাইতে ফেমাস লেনদেনে পরিণত হয়েছে। মজার বিষয় হচ্ছে - ক্রিপটোকারেন্সি নোট বা কয়েনের মতো ছাপা কোনো আক্ষরিক সংখ্যা নেই। অর্থাৎ সহজে বললে এমন একটি মুদ্রা, যা অদৃশ্য, সংকেত বা নাম্বারের মাধ্যমে প্রকাশ পায়, এর না আছে নিজস্ব বস্তুগত কোন আকার, না তা স্পর্শযোগ্য। তেমনিভাবে এর না আছে নিজস্ব কোন মূল্যমান বা উপকারিতা (Intrinsic Value)। এটি ডিজিট আকারে অনলাইনে থাকায় একে ডিজিটাল মানি বা ভার্চুয়াল মানি বা ইলেক্ট্রনিক মানি বলা হয় ক্রিপটোকারেন্সির মধ্য দিয়ে আপনি পণ্য কেনাবেচা করতে পারবেন কিন্তু এটিকে ব্যাংকে বা লকার বা আপনি আপনার পকেটে নিয়ে ঘুরতে পারবেন না। ক্রিপ্টো কারেন্সির একটি ভ্যালু রয়েছে যা অন্যান্য কারেন্সি এর ভ্যালুর থেকে কয়েক হাজারগুণ বেশি আবার কম হতেও পারে। এই নির্ভর করে তার জনপ্রিয়তার উপর। ক্রিপটো কারেন্সি এর ভ্যালু অপরিবর্তিত থাকে না, এর ভ্যালু সর্বদা উঠানামা করে। যার ফলে একদিনে ক্রিপটোকারেন্সির ভ্যালু নানান রকমের হতে পারে।

ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যাবহারের বিভিন্ন দিক রয়েছে। ক্রিপ্টো মুদ্রা দিয়ে আপনি পন্য কেনাকাটা করতে পারবেন। ক্রিপ্টো মুদ্রা দিয়ে আপনি অনলাইনে লেনদেন করতে পারবেন। ক্রিপ্টো কারেন্সিকে আপনি দেশ-বিদেশে আদান প্রদান করতে পারবেন। এই ক্রিপ্টোকারেন্সি একটা কোম্পানির মত। যার অনেকগুলো মুদ্রা রয়েছে। সেই ক্রিপ্টো মুদ্রার একটি হলো বিটকয়েন।

বিটকয়েনের পরিচয় মোটামুটি স্পষ্ট। বিটকয়েন ক্রিপ্টোকারেন্সিরই একপ্রকার মুদ্রা। যেটা স্ক্রিনে সাংকেতিক চিহ্নের মাধ্যমে প্রদর্শিত হয়। এটি ভার্চুয়াল মুদ্রা, বাস্তবিক অর্থে কোন অস্তিত্ব নাই,এর কোম্পানি তাকে বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে তৈরী করেছে। বিটকয়েনের কোন নিজস্ব ফেসভ্যালু নেই।

আমাদের দেশে যেমন মুদ্রা/টাকা তৈরী হয় সরকারি নিয়ন্ত্রণে, মেশিনে। এবং আদান প্রদানের সময় এর যাবতীয় রেকর্ড সরকারি ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়। যার ফলে মানি লন্ডারিং করাটাও টাফ ব্যাপার। তাছাড়া আদানপ্রদানে দেরিও হয়। সমস্ত ঝামেলা থেকে বাঁচতে এবং অবৈধ পথ অবলম্বন করতে ক্রিপ্টোকারেন্সি দারুন ভুমিকা রাখে। ক্রিপ্টোকারেন্সির মুদ্রা তথা বিটকয়েন তৈরীর প্রসেস সম্পূর্ণ ভিন্ন। ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্লকচেইন এর মাধ্যমে কাজ করে। চেইন কথার অর্থ হলো শিকল। সহজ ভাষায় বললে ব্লকচেইন হল একটি চেনের মধ্যে অনেকগুলি ব্লকের সংযুক্ত অবস্থা। যখন ক্রিপটোকারেন্সিতে লেনদেন করা হয় তখন লেনদেনের সমস্ত তথ্য রেকর্ড করে রাখা হয় অর্থাৎ একটি ব্লকে লেনদেনের তথ্য নিরাপত্তার সহিত রাখা হয়। এবং লেনদেন দ্রুত হয়। বিটকয়েন হচ্ছে ভার্চুয়াল টোকেনের মত। যেমন দারাজে ব্যাবহার করি। যার ফলে এটির ব্যাবহার বাড়ছে প্রচুর আকারে। এই ছিলো মোটামুটি বিটকয়েন, ক্রিপ্টোকারেন্সির পরিচয়।

(বিভিন্ন তথ্য অনলাইন থেকে সংগৃহীত, পরিমার্জিত, সংশোধিত)

Share Copy Link

মন্তব্য

সকল প্রসঙ্গ

© ২০২৫ শরয়ী সমাধান - সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

Facebook Group