Logoশরয়ী সমাধান
Cover image

প্রবন্ধ

সরকারি চাকরির বিধানঃ ৩য় পর্ব

Hm Sulayman

১৫ মে, ২০২৫

পার্লামেন্ট সদস্য, বিচারপতি পদে চাকুরি করাঃ গত পর্বে আমরা ডিফেন্স ফোর্স নিয়ে আলোচনা করেছি। আজকে উল্লেখিত বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে ইনশাআল্লাহ। মনে রাখা দরকারঃ আমাদের আলোচনার কিছু মূলনীতি আছে। গতপর্বেও মূলনীতি আলোচনা করেছি। বোঝার সুবিধার্থে আবারো এখানে বলছি। মূলত সরকারি চাকুরির তিনটি পর্যায় হতে পারে। (১) তাগুতি বিধি-বিধান বাস্তবায়নের জন্য কাজ করা। এটা স্পষ্ট কুফর। (২) তাগুতি বিধি-বিধান বাস্তবায়ন নয়, তবে কাজগুলো মৌলিকভাবে হারাম এমন কাজ করা। এটা হারাম কবিরা গোনাহ। তবে কুফুরি নয় (৩) মৌলিকভাবে কাজ হারাম নয়, তবে গভীরভাবে লক্ষ করলে বোঝা যায়, এর দ্বারাও তাগুতি শাসনব্যবস্থার একধরনের সহযোগিতা হয়। এটা স্পষ্ট হারাম নয়, তবে কখনো কখনো প্রাসঙ্গিক বিবেচনায় তা নাজায়েজ বা মাকরুহ বা বৈধ হতে পারে। এখন এই তিন প্রকারকে সামনে রেখেই মুলত আমরা আলোচনা পেশ করব ইনশাআল্লাহ। এবার আসুন, পার্লামেন্ট সদস্যদের ব্যাপারে কথা। পার্লামেন্টের সদস্যগনের মুল কাজ হলো সংবিধান রক্ষা করা, সংবিধানে নীতিমালা প্রণয়ন করা। সংবিধান প্রণয়ন বা তা বাস্তবায়নে অংশগ্রহণ করা কিংবা আইনকানুন, বিধিবিধান ও নীতিমালা রচনা করা, রক্ষণাবেক্ষণ করা এবং তা কার্যকরকরণে ভূমিকা রাখা। কোনো শাসনব্যবস্থার ভিত্তিমূলই হলো তার আইনকানুন ও বিধিবিধান। ইসলামি শাসনব্যবস্থার ভিত্তিমূল হলো, আইনকানুন ও বিধিবিধান প্রণয়নের অধিকার একমাত্র আল্লাহ তাআলার। পক্ষান্তরে তাগুতি শাসনব্যবস্থার ভিত্তিমূলই হলো, এই অধিকার মানবমস্তিষ্কের জন্য সাব্যস্ত করা এবং এক ও অদ্বিতীয় উপাস্য আল্লাহ তাআলা থেকে নিরোধ করা। ইসলাম ও গণতন্ত্রের মৌলিক দ্বন্দ্ব হলো, ইসলাম শেখায়, ইলাহ হলেন একমাত্র আল্লাহ। ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’। অপরদিকে গণতন্ত্র শেখায়, ইলাহ হলো একমাত্র জনগণ। ‘লা ইলাহা ইল্লান্নাস’ (নাঊযুবিল্লাহ)। সুতরাং যে ব্যক্তি তাগুতি শাসনব্যবস্থার অধীনে আইনকানুন ও বিধিবিধান প্রণয়নের চাকরি করবে, সে স্পষ্ট কুফরিতে লিপ্ত। কুরআন, সুন্নাহ ও ইজমা দ্বারা তার কুফর প্রমাণিত। (1) পার্লামেন্টে হাকিমিয়্যাত তথা আইনকানুন ও বিধিবিধান প্রণয়নের অধিকার আল্লাহ তাআলাকে দেওয়া হয় না। আইনের উৎস কুরআন ও সুন্নাহকে মানা হয় না। দেওয়ানি ও ফৌজদারি বিধিসমূহ ইসলাম থেকে গ্রহণ করা হয় না। কোনো বিধি যদি বাহ্যিকভাবে ইসলামের সঙ্গে মিলেও যায়, তা নিরেট কাকতালীয় ব্যাপার ছাড়া কিছু হয় না। বৈধ-অবৈধ, সিদ্ধ-নিষিদ্ধ আখ্যা দেওয়ার ক্ষেত্রে রাসুলুল্লাহ ﷺ-এর শরিয়ত বিবেচনা করা হয় না। জীবনের সবক্ষেত্রে ক্ষমতাধরদের ফায়সালাই চূড়ান্ত ফায়সালা হিসেবে বিবেচিত হয়; এমনকি এর অন্যথা করা হলে তা ইসলামসম্মত হলেও তাদের বিচারে আইনত দণ্ডনীয় হিসেবে গণ্য হয়। এমনকি মুসলমানদের অভ্যন্তরীণ কিছু ব্যাপারে (পারসোনাল ল') যদি ইসলামের ওপর আমল করার স্বাধীনতা থাকে, তাও মুসলমানরা আল্লাহপ্রদত্ত অধিকার হিসেবে পায় না; বরং তাগুতি শাসনব্যবস্থা অনুগ্রহস্বরূপ তাদেরকে এর সুযোগ দিয়েছে বলেই তারা এই অধিকার লাভ করে। এককথায়, তাগুতি শাসনব্যবস্থায় সংবিধান, মন্ত্রণালয়, সংসদ, আদালত সবকিছুই রচিত ও পরিচালিত হয় মানবরচিত বিধান অনুসারে; শরিয়াহ নির্দেশিত নীতি অনুসারে নয়। (2) আল্লামা আব্দুল মালেক সাহেব হাফিজাহুল্লাহ বলেনঃ আকাইদ ও আহকামের বিদ্রূপ কিংবা অস্বীকার তো এজন্যই কুফর যে, তা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য বর্জন এবং তাঁদের প্রতি ঔদ্ধত্য প্রকাশ। সুতরাং গোটা ইসলামকে অস্বীকার বা বিদ্রূপ করা আর ইসলামের কোনো একটি বিষয়কে অস্বীকার বা বিদ্রূপ করা একই কথা! উভয় ক্ষেত্রেই একথা বাস্তব যে, ঐ ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে এবং ঔদ্ধত্য ও বিরুদ্ধতা প্রকাশ করেছে। ইবলীস তো কাফির মরদূদ হয়েছিল একটি হুকুমের উপর আপত্তি করেই। বিষয়টি এমনিতেও স্পষ্ট। এরপরও আল্লাহ তাআলা কুরআন হাকীমে একাধিক জায়গায় তা সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছেন। ( মাসিক আল কাউসারঃ মার্চ, ২০১৩ সাল ) এইজন্য পার্লামেন্টে যারা শরীয়াহ বিরোধী নীতিমালা প্রণয়ন করে, যারা কুরআনের বিপক্ষে সুস্পষ্ট বিধান লঙ্ঘন করে বিধান জারি করে, জেনে বুঝে শরীয়াহ আইনের চাইতে কুফুরি আইনকে উত্তম মনে করে অথবা যদি মনে করে যেঃ শরীয়াহ অনুযায়ী বিচার করা অপরিহার্য নয় এবং ইচ্ছা স্বাধীনতা আছে, অথচ সে নিশ্চিত জানে যে এটি আল্লাহর বিধান; তাহলে এমন ব্যক্তিরা সুস্পষ্ট কুফুরিতে লিপ্ত এবং দ্বীন থেকে খারিজ হয়ে গিয়েছে। এটি কুফরে আকবার তথা বড় কুফুরি। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ… فَأُولَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ… فَأُولَئِكَ هُمُ الْفَاسِقُونَ. ‘যারা আল্লাহর নাজিলকৃত বিধান অনুসারে ফায়সালা করে না, তারাই কাফির, তারাই জালিম, তারাই ফাসিক (সুরা মায়িদাহ: ৪৭) আল্লাহ তাআলার নাজিলকৃত বিধান অনুসারে ফায়সালা না-করার ক্ষতিই যদি এত ভয়াবহ হয়, তাহলে সেই বিধানের বিপরীত বিধান প্রণয়ন করা ও তা জারি করা কত ভয়াবহ হবে, তা সহজেই অনুমেয়। এ কারণেই সেসব ব্যক্তিবর্গকেও তাগুত বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে, যাদের কাছে অন্যরা মানবরিচত বিধান অনুসারে বিচার প্রার্থনা করে। (3) যেমন আল্লাহ বলেনঃ يُرِيدُونَ أَنْ يَتَحَاكَمُوا إِلَى الطَّاغُوتِ তারা তাগুতের কাছে বিচারপ্রার্থী হতে চায়। (সুরা নিসা: ৬০) তাগুত শব্দটি যদিও ব্যাপক; কিন্তু এখানে পূর্বাপর কথা থেকে স্পষ্ট যে, এর দ্বারা শয়তান বা নফস উদ্দেশ্য নয়, পাথরের মূর্তি বা জ্যোতিষিও উদ্দেশ্য নয়। কারণ, তাদের কাছে বিচার প্রার্থনা করা হয় না। এর দ্বারা সেসব মানুষ উদ্দেশ্য, যারা আল্লাহর ফায়সালা ব্যতিরেকে ভিন্ন ফায়সালা প্রদান করে। এজাতীয় ফায়সালাকে কুরআনে জাহিলিয়্যাতের ফায়সালা বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। যেমন রাব্বে কারিম বলেনঃ أَفَحُكْمَ الْجَاهِلِيَّةِ يَبْغُونَ وَمَنْ أَحْسَنُ مِنَ اللَّهِ حُكْمًا لِقَوْمٍ يُوقِنُونَ তারা কি জাহিলিয়্যাতের ফায়সালা কামনা করে? অথচ বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য আল্লাহ অপেক্ষা উত্তম ফায়সালাকারী আর কে হতে পারে!( সুরা মায়িদাহ: ৫০ ) এটাই হলো সরকারি চাকুরির যে তিনটি পর্যায় হতে পারে, তার প্রথম পর্যায় তথা তাগুতি বিধি-বিধান বাস্তবায়নের জন্য কাজ করা। এটা স্পষ্ট কুফর। (4) নোটঃ (১) উপরোক্ত পদে যেই টিম কাজ করে, সেই টিম বা দল দলগতভাবে মুরতাদ। মানুষকে কাফির বলার প্রকার দুইটি (১) তাকফিরে আমঃ ব্যাপকভাবে তাকফির করা বা কাফির বলা। জড়িত প্রত্যেককে কাফির বলা দলগতভাবে, সুনির্দিষ্ট কাউকে নয়। (২) তাকফিরে মুআইয়ানঃ ব্যক্তিবিশেষ নির্দিষ্টভাবে কাউকে কাফির বা মুরতাদ বলা। এটি খুবই সেন্সিটিভ এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সাধারণ কাউকে কাফির সুনির্দিষ্টভাবে বলতে হলে নিজের মধ্যে পর্যাপ্ত ঈলম থাকা আবশ্যক, নতুবা কোনভাবেই একজন সাধারণ মানুষের জন্য কোন ব্যক্তিকে হুটহাট করে কাফির ফতোয়া দেয়া কবিরা গোনাহ, বরং আরো ভয়াবহ। পার্লামেন্ট সদস্যদেরকে দলগতভাবে মুরতাদ বলা হয় দেশে বিধি-বিধান শরয়ী বিধানের বিপরীতে প্রণয়নের কারণে। এরমানে এটা নয় যেঃ এখানে থাকা প্রত্যেক ব্যক্তিই কাফির হয়ে গিয়েছে। দলগতভাবে মুরতাদ দ্বারা উদ্দেশ্য হলোঃ এই দলটি কুফুরি কাজ করেছে, সবাই জড়িত ছিলো। যেমনঃ কোথাও হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হলে ঘটনাস্থলের সবাইকে প্রাথমিক আসামী বলে মামলা করা হয়, দলগতভাবে সবাই আসামী, কিন্তু সেখানে নিরাপরাধ মানুষ অনেকেই আছে। যার কারণে এবার মুল আসামী সাব্যস্ত করতে যেয়ে যাচাই বাছাই শুরু করা হয়। তাকফিরে আম বা দলগত তাকফির বা কাফের এটাকে বলে। তাই ব্যাপকভাবে মুরতাদ বলা হচ্ছে দলগত বিবেচনায়। কিন্তু কখনো কখনো সেই দলে কোন নিরুপায় মুমিন, বা বাধ্যগত মুমিন থাকতে পারে, যে বাধ্য হয়েছে, অথবা যে মনেপ্রাণে কুফুরি বিধান প্রণয়নে বিশ্বাসী নয়। তাহলে এমন ব্যক্তি কাফির হবে না, মুরতাদ হবে না। এই পয়েন্ট বোঝা খুবই জরুরী। পার্লামেন্টের কোন সদস্যকে দেখলেই সাথে সাথে তাকে মুরতাদ বা কাফির বলাটা সুস্পষ্ট ভুল হবে। কারণ এটি তখন তাকফিরে মুআইয়ান তথা ব্যক্তিবিশেষ তাকফির হবে। এটার জন্য ঐ ব্যক্তির গ্রহণযোগ্য ওজর, তার সার্বিক অবস্থা যাচাই করা জরুরি। তবে এমন ব্যক্তি যে কবিরা গোনাহে জড়িত তাতে কোন সন্দেহ নেই। নোট-২ঃ তবে পার্লামেন্ট বা বিচার বিভাগের সদস্যদের যারা কুরআন হাদিসের সুস্পষ্ট অকাট্য কোন বিধি বিধানকে নিয়ে তাচ্ছিল্য করবে, যা কোন শরয়ী বিধানের উপর ঘৃণাভরে আপত্তি তুলবে, কটাক্ষ করবে, যেই বিধানগুলি শরীয়তের মৌলিক স্বঃতশিদ্ধ বিষয়ঃ এমন বিষয়ে আবার তাদের কোন ওজর আপত্তি গ্রহণযোগ্য হবে না, যাচাই করা হবে না । তারা মুরতাদ বলেই গন্য হবে। (২) অনুরুপভাবে যারা সুপ্রিম কোর্ট অথবা জর্জ কোর্ট তথা সর্বোচ্চ বিচারপতির আসনে থাকে, যারা নিজ পদবলে ক্ষমতাবলে ইসলামের সুস্পষ্ট বিধান লঙ্ঘন করে কুফরি বিধানের উপর স্বেচ্ছায় রায় প্রদান করে, যারা শরীয়তের প্রতি বিদ্বেষ রেখে শাতিমে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পক্ষে রায় প্রদান করে এবং নির্দোষ ভাইদেরকে ফাঁসির রায় প্রদান করে; যারা কুরআনের বিপক্ষে সুস্পষ্ট বিধান লঙ্ঘন করে বিধান জারি করে জেনেবুঝে; শরীয়াহ আইনের চাইতে কুফুরি আইনকে উত্তম মনে করে অথবা যদি মনে করে যেঃ শরীয়াহ অনুযায়ি বিচার করা অপরিহার্য নয় এবং ইচ্ছা স্বাধীনতা আছে, অথচ সে নিশ্চিত জানে যে এটি আল্লাহর বিধান; তাহলে এমন ব্যক্তিরা সুস্পষ্ট কুফুরিতে লিপ্ত এবং দ্বীন থেকে খারিজ হয়ে গিয়েছে। এটি কুফরে আকবার তথা বড় কুফুরি। এমন প্রত্যেক ব্যক্তি তাগুত এবং মুরতাদ। এরা দলগতভাবে মুরতাদ। এদের প্রত্যেকের অবস্থা সর্বোচ্চ যাচাই ব্যতীত তাদেরকে মুসলিম বলা হবে না। (5) কোন বিচারক যদি অনিচ্ছায় বাধ্য হয়ে শরীয়ত বিরোধী রায় প্রদান করে, এবং সে শরীয়তের বাধ্যবাধকতাকে অপরিহার্য বলেই মেনে নিয়ে বাধ্য হয়ে অথবা প্রবৃত্তির অনুসারণে এমন রায় প্রদান করেঃ যা শরীয়াহর সঙ্গে সুস্পষ্ট সাংঘর্ষিক এবং যে এমন কাজ করে থাকেঃ তাহলে তার এই কাজও কুফর, তবে এটি কুফরে আসগার তথা বড় কুফরের চাইতে একটু কম। কবীরা গোনাহ হবে, তবে কাফির হবে না। (6) তার এই চাকুরি জায়েজ নয়। এবং তার অধিকাংশ কাজ এমন হলে তার বেতন হালাল হবে না। কারণ গোনাহ, কুফুরি কাজ করে বিনিময় গ্রহণ জায়েজ নাই। (7) ভালোভাবে বুঝে নিন, শরীয়তের বিধি বিধানকে হক ও অবশ্যপালনীয় বলে স্বীকার করার পর পালনে ত্রুটি হলে তা গোনাহ, কুফর নয়। কারণ এই ব্যক্তি নিজেকে অপরাধী মনে করে। পক্ষান্তরে বিধানের উপর বিরুদ্ধপ্রশ্ন বা প্রতিবাদের অর্থ সরাসরি আনুগত্য-ত্যাগ, যা সাধারণ অপরাধ নয়, বিদ্রোহ। এটা মানুষকে দুনিয়ার বিধানে ‘মোবাহুদ দম’ (হত্যাযোগ্য) আর আখিরাতের বিধানে চিরজাহান্নামী সাব্যস্ত করে। ( মাসিক আল কাউসারঃ মার্চ, ২০১৩ সাল ) তবে যারা এমনি গ্রাম্য পর্যায়ের আদলতের বিচারক বা সাধারণ কোর্টের বিচারক, যেখানে কোন জাতীয় আইন পাশ হয় না, যেখানে স্পষ্ট শরীয়াহর সঙ্গে সাংঘর্ষিক আইন পাশ হয় না, তবে মাঝেমধ্যেই মিথ্যা মামলার রায়, অন্যায়ের পক্ষে ফায়সালা দেয়া ইত্যাদি কাজে যেসব বিচারক লিপ্ত থাকে; তাদের জন্য এমন চাকুরি নাজায়েজ। আর যদি কেউ এমন কাজ ধারাবাহিকভাবে করতে থাকে, ঘুষ খেয়ে কাজ করে, হোক সে উকিল বা বিচারপতিঃ তাহলে তার চাকুরি অবৈধ এবং বেতনও বৈধ নয়। এটা হলো দ্বিতীয় পর্যায়ে তথা যা সত্তাগতভাবে হারাম। আর যদি কোন ব্যক্তি সৎ নিয়তে নিম্ন পর্যায়ের বিচারপতি/উকিল ইত্যাদি পদে যোগ দেয়, যার নিয়ত হলো মানুষকে হেল্প করা, অথবা যার কাছে এই মুহুর্তে জীবিকা নির্বাহের জন্য ভিন্ন কোন পন্থা বাকি নাইঃ (কারণ উচ্চপদে বিচারপতি হলে তার পক্ষে কখনো বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় কুরআন সুন্নাহর অনুযায়ী রায় প্রদান করা সম্ভব নয়, তাই যেটা স্পষ্ট অসম্ভব, যেখানের সিস্টেমেই কুরআন সুন্নাহ নাইঃ সেখানে চাকুরিতে যোগদান করা যাবে না।) তাহলে এমন ব্যক্তি যদি এই পদে যোগ দেয় তাহলে সেটা তার জন্য জায়েজ হতে পারে। (9) এসব পদে থাকতে গেলে মিথ্যা বা স্বজনপ্রীতি করতেই হয়। সেরকম কিছু পাওয়া গেলে তা হারাম হবে। তবে বেতন হালাল হবে। কিন্তু এসব চাকুরি কখনো মাকরুহ থেকে খালি নয়। (10) এটা হলো তৃতীয় পর্যায়েরঃ যা কখনো কখনো নাজায়েজ হয়, কখনো কখনো মাকরুহ হয়। সর্বোপরি এটিও প্রকারান্তরে তাগুতের দল ভারী করার একটি ক্ষুদ্র পদক্ষেপ। (1) وقال ابن كثير رحمه الله : " فمن ترك الشرع المحكم المنزل على محمد بن عبد الله خاتم الأنبياء ، وتحاكم إلى غيره من الشرائع المنسوخة كفر ، فكيف بمن تحاكم إلى الياسا وقدمها عليه ؟! من فعل ذلك كفر بإجماع المسلمين " انتهى من "البداية والنهاية" (13/139) قال شيخ الإسلام ابن تيمية رحمه الله : " والإنسان متى حلل الحرام المجمع عليه ، أو حرم الحلال المجمع عليه ، أو بدل الشرع المجمع عليه ، كان كافرا مرتدا باتفاق الفقهاء " انتهى من "مجموع الفتاوى" (3/267). (2) یعنی جو لوگ اللہ کے نازل کیے ہوئے احکام کو واجب نہیں سمجھتے، اور ان پر فیصلہ نہیں دیتے بلکہ ان کے خلاف فیصلہ کرتے ہے،او کافر و منکر جن کی سزا دایمی جہنم ہے ( معارف القران: 161/3) ﴿وَمَن لَمْ يَحْكم بِما أنْـزَلَ اللهُ﴾ مُسْتَهِينًا بِهِ ﴿فَأُولَئِكَ هُمُ الكافِرُونَ﴾ قالَ ابْنُ عَبّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُما: مَن لَمْ يَحْكم جاحِدًا فَهو كافِرٌ، وإنْ لَمْ يَكُنْ جاحِدًا فَهو فاسِقٌ ظالِمٌ، وقالَ ابْنُ مَسْعُودٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ: هو عامٌّ في اليَهُودِ وغَيْرِهِمْ. ( تفسير النسفي: 449/1) قال القرطبي: قَوْلُهُ تَعَالَى: ﴿أَرْباباً مِنْ دُونِ اللَّهِ﴾ قَالَ أَهْلُ الْمَعَانِي: جَعَلُوا أَحْبَارَهُمْ وَرُهْبَانَهُمْ كالأرباب حيث أطاعوهم في كل شي، وَمِنْهُ قَوْلُهُ تَعَالَى: ﴿قالَ انْفُخُوا حَتَّى إِذا جَعَلَهُ ناراً﴾(٢) [الكهف: ٩٦] أَيْ كَالنَّارِ. (3) قال السعدي في تفسيره: يشهد تعالى عباده من حالة المنافقين ويتعجب: {الَّذِينَ يَزْعُمُونَ أَنَّهُمْ} مؤمنون بما جاء به الرسول وبما قبله، ومع هذا {يُرِيدُونَ أَنْ يَتَحَاكَمُوا إِلَى الطَّاغُوتِ} وهو كل من حكم بغير شرع الله فهو طاغوت. والحال أنهم {قد أُمِرُوا أَنْ يَكْفُرُوا بِهِ} فكيف يجتمع هذا والإيمان؟ فإن الإيمان يقتضي الانقياد لشرع الله وتحكيمه في كل أمر من الأمور، فمَنْ زعم أنه مؤمن واختار حكم الطاغوت على حكم الله، فهو كاذب في ذلك. وهذا من إضلال الشيطان إياهم، ولهذا قال: {وَيُرِيدُ الشَّيْطَانُ أَنْ يُضِلَّهُمْ ضَلالا بَعِيدًا} عن الحق (تفسير السعدي: 108) (4) قال ابن القيم في مدارج السالكين: والصحيح أن الحكم بغير ما أنزل الله يتناول الكفرين، الأصغر والأكبر بحسب حال الحاكم فإنه إن اعتقد وجوب الحكم بما أنزل الله في هذه الواقعة، وعدل عنه عصيانا، مع اعترافه بأنه مستحق للعقوبة، فهذا كفر أصغر، وإن اعتقد أنه غير واجب، وأنه مخير فيه، مع تيقنه أنه حكم الله، فهذا كفر أكبر، وإن جهله وأخطأه، فهذا مخطئ، له حكم المخطئين (مدارج السالكين: ٢٥٩/١) قالَ عِكْرِمَةُ: قَوْلُهُ ﴿ومَن لَمْ يَحْكم بِما أنْزَلَ اللَّهُ﴾ إنَّما يَتَناوَلُ مَن أنْكَرَ بِقَلْبِهِ وجَحَدَ بِلِسانِهِ، أمّا مَن عَرَفَ بِقَلْبِهِ كَوْنَهُ حُكْمَ اللَّهِ وأقَرَّ بِلِسانِهِ كَوْنَهُ حُكْمَ اللَّهِ، إلّا أنَّهُ أتى بِما يُضادُّهُ فَهو حاكِمٌ بِما أنْزَلَ اللَّهُ تَعالى، ولَكِنَّهُ تارِكٌ لَهُ، فَلا يَلْزَمُ دُخُولُهُ تَحْتَ هَذِهِ الآيَةِ، وهَذا هو الجَوابُ الصَّحِيحُ واللَّهُ أعْلَمُ ( تفسير الرازي: 445/5) (5) وفي هذه الآية دلالة على أن من رد شيئا من أوامر الله تعالى أو أوامر رسوله صلى الله عليه وسلم فهو خارج من الإسلام سواء رده من جهة الشك فيه أو من جهة ترك القبول والامتناع من التسليم ، وذلك يوجب صحة ما ذهب إليه الصحابة في حكمهم بارتداد من امتنع من أداء الزكاة وقتلهم وسبي ذراريهم ؛ لأن الله تعالى حكم بأن من لم يسلم للنبي صلى الله عليه وسلم قضاءه وحكمه فليس من أهل الإيمان (احكام القرآن للجصاص: 181/3) ﴿فَأُولَئِكَ هُمُ الكافِرُونَ﴾ لِاسْتِهانَتِهِمْ بِهِ وتَمَرُّدِهِمْ بِأنْ حَكَمُوا بِغَيْرِهِ، ولِذَلِكَ وصَفَهم بِقَوْلِهِ الكافِرُونَ والظّالِمُونَ والفاسِقُونَ، فَكُفْرُهم لِإنْكارِهِ، وظُلْمُهم بِالحُكْمِ عَلى خِلافِهِ، وفِسْقُهم بِالخُرُوجِ عَنْهُ ( تفسير البيضاوي: ١٢٨/٢) ولما كان الأمر كذلك فإن كلام السلف ومنهم ابن القيم كلام لا غبار عليه، فإذا حكم الحاكم برشوة أو لقرابة، أو شفاعة أو ما أشبه ذلك فلا شك أن ذلك كفر دون كفر..وأما ما جد في حياة المسلمين - ولأول مرة في تاريخهم - وهو تنحية شريعة الله عن الحكم ورميها بالرجعية والتخلف وأنها لم تعد تواكب التقدم الحضاري، والعصر المتطور فهذه ردة جديدة في حياة المسلمين. إذ الأمر لم يقتصر على تلك الدعاوى التافهة، بل تعداه إلى إقصائها فعلاً عن واقع الحياة واستبدال الذي هو أدنى بها، فحل محلها القانون الفرنسي أو الإنجليزي أو الأمريكي أو الاشتراكية الإلحادية وما أشبه ذلك من تلك النظم الجاهلية الكافرة.(الولاء والبراء لسعيد القحطان: ص٦٨) (6)قال ابن القيم في مدارج السالكين: والصحيح أن الحكم بغير ما أنزل الله يتناول الكفرين، الأصغر والأكبر بحسب حال الحاكم فإنه إن اعتقد وجوب الحكم بما أنزل الله في هذه الواقعة، وعدل عنه عصيانا، مع اعترافه بأنه مستحق للعقوبة، فهذا كفر أصغر، وإن اعتقد أنه غير واجب، وأنه مخير فيه، مع تيقنه أنه حكم الله، فهذا كفر أكبر، وإن جهله وأخطأه، فهذا مخطئ، له حكم المخطئين (مدارج السالكين: ٢٥٩/١) (7)"(لا تصح الإجارة لعسب التيس) وهو نزوه على الإناث (و) لا (لأجل المعاصي مثل الغناء ‌والنوح ‌والملاهي). وفي الرد:مطلب في الاستئجار على المعاصي (قوله مثل الغناء) بالكسر والمد الصوت، وأما المقصور فهو اليسار صحاح (قوله والنوح) البكاء على الميت وتعديد محاسنه (قوله والملاهي) كالمزامير والطبل، وإذا كان الطبل لغير اللهو فلا بأس به كطبل الغزاة والعرس لما في الأجناس ... وفي المنتقى: امرأة نائحة أو صاحبة طبل أو زمر اكتسبت مالا ردته على أربابه إن علموا وإلا تتصدق به، وإن من غير شرط فهو لها: قال الإمام الأستاذ لا يطيب، والمعروف كالمشروط اهـ. قلت: وهذا مما يتعين الأخذ به في زماننا لعلمهم أنهم لا يذهبون إلا بأجر ألبتة." (فتاوي شامي: كتاب الاجارة، مطلب في الاستئجار علي المعاصي، ج:6، ص:55، ط:سعيد) (8)وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَى وَلا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإثْمِ وَالْعُدْوَانِ وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ) المائدة/2) مَنْ دَعَا إِلَى هُدًى كَانَ لَهُ مِنْ الأَجْرِ مِثْلُ أُجُورِ مَنْ تَبِعَهُ لا يَنْقُصُ ذَلِكَ مِنْ أُجُورِهِمْ شَيْئًا وَمَنْ دَعَا إِلَى ضَلالَةٍ كَانَ عَلَيْهِ مِنْ الإِثْمِ مِثْلُ آثَامِ مَنْ تَبِعَهُ لا يَنْقُصُ ذَلِكَ مِنْ آثَامِهِمْ شَيْئًا ) أخرجه مسلم في صحيحه (4831). وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَى وَلا تَعَاوَنُوا عَلَى الإثْمِ وَالْعُدْوَانِ ) يأمر تعالى عباده المؤمنين بالمعاونة على فعل الخيرات ، وهو البر ، وترك المنكرات ، وهو التقوى ، وينهاهم عن التناصر على الباطل ، والتعاون على المآثم ، والمحارم . "( تفسير ابن كثير :2 / 12-13) (9) فَمَنِ ٱضۡطُرَّ غَیۡرَ بَاغࣲ وَلَا عَادࣲ فَلَاۤ إِثۡمَ عَلَیۡهِۚ إِنَّ ٱللَّهَ غَفُورࣱ رَّحِیمٌ ( سورة البقرة:173) عن عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَلَى الْمِنْبَرِ، قَالَ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقُولُ : " إِنَّمَا الْأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ، وَإِنَّمَا لِكُلِّ امْرِئٍ مَا نَوَى..( صحيح البخاري: 1) وفي فتوى اهل سمرقند: اذا استاجر رجلا ينحت له طنبورا او بربطا ففعل يطيب له الاجر الا انه ياثم في الاعانة على المعصية وانما وجب له الاجر في هذه المسائل.( المحيط البرهاني: 446/11, البحر الرائق: 36/8) (10)وعن محمد: رجل استاجر رجلا لصور له صورا او تماثيل الرجال في بيت او فسطاط فاني اكره ذلك واجعل له الاجر : (هندية: كتاب الاجارة: 450/4،قديم ، الفتاوي التاتارخانية: 130/15)
বিস্তারিত পড়ুন

সকল প্রসঙ্গ

২৭তম রজনী
অনলাইন কোর্স
অলিম্পিক
আংটি
আধুনিক মাসআলা
আধুনিক মাসাআলা
উম্মুল মু'মিনিন
ওকালতি
কাফফারা
কাযা
কুড়িয়ে পাওয়া জিনিস
ক্রিকেট
ক্রিপ্টোকারেন্সি
ক্র্যাকড
খেলাধুলা
খেলাধুলা হতে উপার্জন
জর্দা
ডাক্তারি বিদ্যা
ডিফেন্স ফোর্স
তামাক
তারাবীহ
তালাক
দোআ
দোয়া
নবীজি
নবুয়তের সিলমোহর
নেশা
নৌবাহিনী
পাইরেটেড
পার্লামেন্ট সদস্য
পুলিশ
পেইড কোর্স
ফিদিয়া
ফুটবল
বিচারপতি
বিটকয়েন
বিড়ি
বিডিআর
ব্যবসায়
ব্যাডমিন্টন
ব্যারিস্টার
মদ
মাকরুহ
মুনাজাত
মেডিকেল
যাকাত
যাকাত-ফিতরা
রাস্তায় পাওয়া জিনিস
রোজা
রোজা ভঙ্গের কারণ
রোজার মাসআলা
রোজার মাসাআলা
রোযা ভঙ্গের কারণ
র‍্যাব
লাইলাতুল ক্বদর
লাইলাতুল বারাআত
শবে ক্বদর
শবে বরাত
শিক্ষক
সফটওয়্যার
সংবিধান
সরকারি চাকরি
সহশিক্ষা
সামরিক বাহিনী
সিগারেট
সেনাবাহিনী
স্ত্রী

© ২০২৫ শরয়ী সমাধান - সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

Facebook Group