Logoশরয়ী সমাধান
Cover image

প্রবন্ধ

মেডিকেলে সহশিক্ষার বিধান

Hm Sulayman

২৮ এপ্রিল, ২০২৫

ডাক্তারি বিদ্যা শিখতে গেলে বর্তমান সময়ে সহশিক্ষার বিকল্প পাওয়া কঠিন, অনুরুপভাবে মহিলা সার্জনের দরকারও বেশ আছে, সেক্ষেত্রে হুকুম কি হবে! নিঃসন্দেহে ডাক্তারি বিদ্যা মহৎ কাজ এবং পেশা। মানব জীবনে এটির গুরুত্ব অপরিসীম। শরীয়তেও এর মর্যাদা অনেক বেশি। তবে প্রতিটি কাজই শরীয়াহ অনুযায়ী হতে হবে। শরীয়াহর বাহিরে যেয়ে কোন কিছু করার সুযোগ নেই। পর্দা করা ফরজ। যে কোন অবস্থাতেই পর্দা করতে হবে। নুন্যতম ছাড় নাই। হ্যাঁ, যদি কখনো এমন অনন্যোপায় হতে হয়, যখন পর্দা করার প্রবল ইচ্ছা থাকা সত্তেও পর্দা করা সম্ভব হয়নি, যেমন কোন পুরুষ কোন নারীকে হটাৎ দেখে ফেলল, বা কোন নারীর অজান্তে কোন পুরুষ তাকে দেখে ফেললো; তাহলে এসব ক্ষেত্রে ঐ মহিলার গোনাহ হবে না। কোন মহিলার স্বামী বা সন্তান না থাকলেও পর্দার সহিত সে জীবিকা অর্জন করবে। সম্ভব নয়; এ কথা সম্পূর্ণ ভুল। বরং স্বদিচ্ছার অভাব। পর্দা করা ফরজ, মেডিকেল পড়া, ডাক্তারি বিদ্যা শিক্ষা করা, উচ্চ শিক্ষিত হওয়া ফরজ নয়। ওয়াজিবও নয়। হ্যাঁ; মহিলাদের চিকিৎসার জন্য অবশ্যই মহিলা চিকিৎসক আবশ্যক, জরুরী। সেটার জন্য আলাদা সিস্টেম থাকতে হবে। সম্পূর্ণ মহিলাদের জন্য আলাদা প্রশিক্ষণাগার থাকতে হবে। সেটার ব্যাবস্থা করতে হবে। সারাদিন পুরুষের সঙ্গে থেকে পড়াশোনা করা, প্রশিক্ষণের জন্য পুরুষের শরীর স্পর্শ করা, পুরুষ হয়ে নারীর শরীর স্পর্শ করা এগুলার কোন নুন্যতম সুযোগ নেই। কোথাও যদি এমন হয়, কোন দেশে যদি এমন পরিস্থিতি তৈরী হয় : যেখানে গাইনী ডাক্তার নাই বললেই চলে, কোনভাবেই প্রয়োজন পূর্ণ হচ্ছে না, সেক্ষেত্রে সহশিক্ষা ব্যাতীত অন্য কোন ব্যবস্থা না থাকলে হোস্টেল বা ক্লাসে সর্বদা পর্দার মধ্যেই থেকে পড়তে হবে। পর্দা ছাড়া পড়ার কোন অনুমতি নাই। এবং মহিলা পুরুষের শরীর অথবা পুরুষ মহিলার শরীর স্পর্শ করবে না। বরং প্রত্যেকেই নারী নারীকে পুরুষ পুরুষকে দেখবে। অগত্যা কখনো যদি এমন কোন পরিস্থিতি সামনে আসে, যখন গাইরে মাহরামকে স্পর্শ না করে পারা যাচ্ছে না, নিজে এব্যাপারে সর্বচ্চো চেস্টা করার পরেও যদি স্পর্শ না করে থাকা সম্ভব না হয়, সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র প্রশিক্ষণের জন্য সাময়ীক অনুমতি আছে। তবে এর জন্য অবশ্যই তাওবাহ করবে। বর্তমান সময়ে আমাদের দেশে গাইনী ডাক্তারের সংখ্যা কম হলেও তা এমন নয় যে, তার দ্বারা কোনভাবেই প্রয়োজন পূরণ হচ্ছে না, বা রোগী মারা যাচ্ছে। শরয়ী পর্দার মধ্যে থেকে যদি প্রশিক্ষণ নেয়া,পড়াশোনা সম্ভব হয়, তাহলে সেটা করার অনুমতি আছে। নতুবা বর্তমান সময়ে মহিলাদের জন্য এরকম।সহশিক্ষা এবং পুরুষের শরীর এভাবে স্পর্শ করার মত কোন পরিস্থির বৈধতা নাই। তাছাড়া শরীয়ত আমাকেই ডাক্তার হওয়ার দায়িত্ব আরোপ করেনি, বা আমি না করলে প্রয়োজন কোনভাবেই পূরণ হচ্ছে না, বিষয়টি এমন নয়। এছাড়াও মহিলা ডাক্তার কোনভাবে না পাওয়া গেলে পরিস্থিতির কারণে, জান বাঁচানোর তাগিদে, অপারাগতা বশত পুরুষ ডাক্তার মহিলা পেশেন্টের চিকিৎসা করতে পারে। অতএব মহিলাদেরও ডাক্তারি পড়তে হবে, এ কথা বলে সার্বক্ষণিক বেপর্দার মধ্যে থাকার সুযোগ নাই। যদি কেউ মেডিকেলে পড়ে, এবং সে বেপর্দায় থাকে, পুরুষের সঙ্গে একান্ত বাধ্য হয়ে জরুরী কথা ছাড়া অতিরিক্ত কোন কথা বলে, গলার স্বর উচু করে; তাহলে এমন মহিলা কবীরা গোনাহে লিপ্ত বলে বিবেচিত হবে। আর পূর্ণাঙ্গ শরয়ী পর্দা সহকারে পড়তে পারলে তার সুযোগ আছে। নোটঃ ডাক্তারি বিদ্যা একটি অত্যন্ত জরুরী বিদ্যা, জীবন বাঁচানোর মত মহৎ কাজ জড়িত এখানে। সেটা শিক্ষা করার ক্ষেত্রেই যখন এতটা শরয়ী পাবন্দি করা জরুরী, শরীয়তের এত বিধি নিষেধ, তাহলে সরকারি চাকুরির জন্য, উচ্চ শিক্ষার জন্য প্রচলিত সহশিক্ষার বিধান কি হতে পারে, সেটি একজন বিবেকবান ব্যক্তি মাত্রই বুঝে নিতে পারবে। প্রচলিত সহশিক্ষা ব্যবস্থার যে দৃশ্যপট আর চিত্রায়ন আমাদের সামনে আছে, শরয়ী বিধান অনুযায়ী তা সম্পূর্ণ রুপে নাজায়েজ । দলীল সমূহ ক্বাওয়াইদুল ফিক্বহঃ "إذا تعارض مفسدتان روعي أعظمهما ضرراً بارتکاب أخفهما". (ص/۵۶ ، فقه النوازل :۴/۲۱۴ ، أحکام الجراحة) ফতোয়ায়ে আলমগিরিঃ :امرأة أصابتها قرحة في موضع لایحل للرجل أن ینظر إلیه، لایحل أن ینظر إلیهما، لکن تعلم امرأة تداویها، فإن لم یجدوا امرأة تداویها ولا امرأة تتعلم ذلك إذا علمت، وخیف علیها البلاء والوجع أو الهلاك، فإنه یستر منها کل شيء إلا موضع تلك القرحة، ثم یداویها الرجل ویغض بصره ما استطاع إلا عن ذلك الموضع، ولا فرق في هذا بین ذوات المحارم وغیرهنّ، لأن النظر إلی العورة لایحل بسبب المحرمیة". (۵/۳۳۰ ، کتاب الکراهية، الباب الثامن فیما یحل للرجل النظر الخ) শামিঃ رد المحتار : "إذا کان المرض في سائر بدنها غیر الفرج یجوز النظر إلیه عند الدواء؛ لأنه موضع ضرورة، وإن کان في موضع الفرج، فینبغي أن یعلم امرأة تداویها، فإن لم توجد وخافوا علیها أن تهلك أو یصیبها وجع لاتحتمله یستروا منها کل شيء إلا موضع العلة، ثم یداویها الرجل، ویغضّ بصره ما استطاع إلا عن موضع العلة، ثم یداویها الرجل ویغضّ بصره ما استطاع إلا عن موضع الجرح". (۹/۴۵۳ ، الحظر والإباحة ، فصل في النظر والمسّ তাফসিরে ইবনে কাসিরঃ تفسير ابن كثير :ج: 6 / ص: 44) { وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ } "فقوله تعالى: { وقل للمؤمنات يغضضن من أبصارهن } أي: عما حرم الله عليهن من النظر إلى غير أزواجهن. ولهذا ذهب [كثير من العلماء] إلى أنه لا يجوز للمرأة أن تنظر إلى الأجانب بشهوة، ولا بغير شهوة أصلا. واحتج كثير منهم بما رواه أبو داود والترمذي، من حديث الزهري، عن نبهان -مولى أم سلمة -أنه حدثه: أن أم سلمة حدثته: أنها كانت عند رسول الله صلى الله عليه وسلم وميمونة، قالت: فبينما نحن عنده أقبل ابن أم مكتوم، فدخل عليه، وذلك بعدما أمرنا بالحجاب، فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: "احتجبا منه" فقلت: يا رسول الله، أليس هو أعمى لا يبصرنا ولا يعرفنا؟ فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: "أو عمياوان أنتما؟ ألستما تبصرانه" . ثم قال الترمذي: هذا حديث حسن صحيح. وذهب آخرون من العلماء إلى جواز نظرهن إلى الأجانب بغير شهوة، كما ثبت في الصحيح: أن رسول الله صلى الله عليه وسلم جعل ينظر إلى الحبشة وهم يلعبون بحرابهم يوم العيد في المسجد، وعائشة أم المؤمنين تنظر إليهم من ورائه، وهو يسترها منهم حتى ملت، ورجعت." মাবসুত, সারাখসিঃ (كتاب المبسوط للشيباني :ج: 1 / ص: 464) "ولا بأس بأن تنظر المرأة التي لا نكاح بينها وبين الرجل منه إلى جميع جسده ،ووجهه، ورأسه إلا ما بين سرته إلى ركبته، فإن ذلك عورة ،ولا ينبغي لها أن تنظر إليه...ولا ينبغي لها أن تمس منه قليلا ولا كثيرا إذا كانت شابة يشتهي مثلها ،أو كان شابا يجامع مثله." (رد المحتار :ج: 26 ،ص: 392) আল বাহরুর রায়িকঃ "وفي الأشباه : الخلوة بالأجنبية حرام إلا لملازمة مديونة هربت ودخلت خربة، أو كانت عجوزا شوهاء." (البحر الرائق شرح كنز الدقائق :ج: 3 / ص: 72) "ذكر الإمام أبو العباس القرطبي في كتابه في السماع: ولا يظن من لا فطنة عنده أنا إذا قلنا صوت المرأة عورة أنا نريد بذلك كلامها ؛ لأن ذلك ليس بصحيح،فإنا نجيز الكلام مع النساء الأجانب ومحاورتهن عند الحاجة إلى ذلك ،ولا نجيز لهن رفع أصواتهن ،ولا تمطيطها،ولا تليينها، وتقطيعها لما في ذلك من استمالة الرجال إليهن،وتحريك الشهوات منهم، ومن هذا لم يجز أن تؤذن المرأة." (رد المحتار :ج: 1 ، ص: 101) "قال في تبيين المحارم : وأما فرض الكفاية من العلم ، فهو كل علم لا يستغنى عنه في قوام أمور الدنيا كالطب، والحساب ،والنحو، واللغة، والكلام."
বিস্তারিত পড়ুন

সকল প্রসঙ্গ

© ২০২৫ শরয়ী সমাধান - সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

Facebook Group